
প্রকাশিত হল ‘কাব্যতরী’ সাহিত্য পত্রিকার শারদ সংখ্যা
জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী, কলকাতা -: যতই আমরা ডিজিটাল যুগে প্রবেশ করি অথবা পাঠকের মধ্যে বই পড়ার আগ্রহ কমুক, তারপরও একশ্রেণীর পাঠকের পাশাপাশি কাব্য স্রষ্টার মনে শারদীয়া পত্রিকা আলাদা তাৎপর্য বহন করে আনে। আবার সেটা যদি 'কাব্যতরী'-র মত কোনো জনপ্রিয় সাহিত্য পত্রিকা হয় তাহলে তার গুরুত্বই আলাদা। এবারের সংখ্যাটি আবার 'ভৌতিক সংখ্যা'। ফলে ৮ থেকে ৮০ সবার কাছে হয়ে উঠবে আকর্ষণীয়। গত জুন মাস থেকে রাজ্য জুড়ে চলছে প্রায় একটানা বৃষ্টি। আবহাওয়া দপ্তরের ইঙ্গিত সৃষ্টি হয়েছে নিম্নচাপ এবং তার হাত ধরে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা। চিন্তিত ছিলেন ‘কাব্যতরী’ সাহিত্য পত্রিকার প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক তথা প্রাণপুরুষ প্রবীর চৌধুরী। কারণ পত্রিকাটির শারদীয় সংখ্যার প্রকাশ ক্ষণ ছিল আসন্ন। অবশেষে সব আশঙ্কা দূর করে গত ৩১ শে আগস্ট কলকাতার কলেজ স্ট্রিটের 'হিতসাধনী' সভাগৃহে একগুচ্ছ কবি-সাহিত্যিকের উপস্থিতিতে প্রকাশিত হল 'কাব্যতরী' সাহিত্য পত্রিকার শারদ সংখ্যা। এটি ছিল দশম বর্ষের তৃতীয় সংখ্যা এবং ৫১ জন লেখকের সৃষ্টি সমৃদ্ধ সম্পূর্ণ 'ভৌতিক সংখ্যা'। পত্রিকা প্রকাশ অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে আয়োজিত হয় একটি সুন্দর ও আকর্ষণীয় সাহিত্যানুষ্ঠানের। অনুষ্ঠানে উদ্বোধনী সঙ্গীত পরিবেশন করেন বিশিষ্ট সঙ্গীত শিল্পী তথা কবি চন্দ্রাবলী বন্দ্যোপাধ্যায়। বই প্রকাশ অনুষ্ঠানে উপস্থিত কবিরা স্বরচিত কবিতা পাঠ করেন। কবি বৈজয়ন্ত রাহা এবং কবি দেবনারায়ণ দাসের সাহিত্য বিষয়ক মননশীল আলোচনা এক সময় অনুষ্ঠানটিকে অন্য উচ্চতায় পৌঁছে দেয় এবং প্রকৃত অর্থেই অনুষ্ঠানটি প্রাণবন্ত ও সাহিত্যময় হয়ে ওঠে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কবি মুনমুন মুখার্জ্জী, রঞ্জন চক্রবর্তী, দুলাল সুর, সুকান্ত কর্মকার, কালিরঞ্জন রায়, রত্না সেনগুপ্ত, শিলাবৃষ্টি, কবি ও রম্যরচনাকার প্রদীপ কুমার দে, জয় চক্রবর্তী, সমর্পিতা রাহা, তনুশ্রী নাইয়া সহ আরও অনেক বিশিষ্ট কবি-সাহিত্যিক। এর আগে উদ্যোক্তাদের পক্ষ থেকে তাদের যথাযোগ্য সম্মান দিয়ে বরণ করা হয়। প্রত্যেকের হাতে তুলে দেওয়া হয় পত্রিকার সৌজন্য সংখ্যা, স্মারক, মানপত্র ও একটি করে কলম। অনুষ্ঠানে দশজন লেখককে উৎসাহিত ও অনুপ্রাণিত করার জন্য 'অনিল কুমার চৌধুরী স্মৃতি সম্মাননা, ২০২৫', ছয়জনকে 'গুণীজন সম্মাননা, ২০২৫' প্রদান করা হয়। সুদূর বার্ণপুর থেকে এসেছিলেন কবি মুনমুন মুখার্জ্জী। তার সংক্ষিপ্ত প্রতিক্রিয়া - যত সমস্যা হোক দাদার অনুষ্ঠানে না এসে থাকা যায়না। এই আন্তরিকতা ভোলা যায়না। বৃষ্টির আশঙ্কাকে উপেক্ষা করে সাহিত্যের টানে দূর থেকে আসা কবি-সাহিত্যিকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে প্রবীর বাবু বললেন – আজ সত্যিই খুব আনন্দের দিন। বাংলার অন্যতম শ্রেষ্ঠ কবি-সাহিত্যিকদের উপস্থিতিতে সভাগৃহ পরিণত হয়েছিল মিলন মেলায়। আশাকরি আগামীদিনেও এদের সঙ্গে সঙ্গে নতুন নতুন কবি প্রতিভাদেরও পাশে পাব। অনুষ্ঠানে পৌরোহিত্য করেন কবি বৈজয়ন্ত রাহা এবং কবি দেবনারায়ণ দাস। সমগ্র অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন কবি চন্দ্রাবলী বন্দ্যোপাধ্যায়।