রাজ্য সরকারের সাথে এবার সংঘাতের পথে হাঁটতে চলেছে বেঙ্গল রাইস মিল অ্যাসোসিয়েশন

রাজ্য সরকারের সাথে এবার সংঘাতের পথে হাঁটতে চলেছে বেঙ্গল রাইস মিল অ্যাসোসিয়েশন

তন্ময় মাহারা: মালদা:- রাজ্য সরকারের সাথে এবার সংঘাতের পথে হাঁটতে চলেছে বেঙ্গল রাইস মিল অ্যাসোসিয়েশন! ধান ভাঙার সরকারি বরাদ্দ বৃদ্ধি না হলে সরকারের সাথে চুক্তি করবেন না মিল মালিকেরা। ফলে রেশনিং ব্যবস্থা বির্পযস্ত হওয়ার সম্ভবনা। সহায়ক মুল্যে চাষীরা ধান বিক্রি করতে না পারলে ফোড়েদের  দাপট বৃদ্ধির আশঙ্কাও রয়েছে।মালদার একটি বেসরকারী হোটেলে মালদা ও দুই দিনাজপুরের রাইস মিল  অ্যাসোসিয়েনের সদস্যদের সাথে বৈঠক করেন রাজ্য নেতৃত্ব। বৈঠক শেষে রাজ্য সরকারের সাতে চুক্তি নবিকরন করা হবে না বলে হুঁশিয়ারী দেন সংগঠনের নেতৃত্ব। সংগঠনের তরফে জানানো হয়েছে প্রতি কুইন্ট্যল ধান ভাঙাতে তাদের খরচ হয় ১০০টাকার ওপরে অথচ তারা পান মাত্র ৩০টাকা। যার মধ্যে কেন্দ্র সরকার দেয় ২০টাকা রাজ্য সরকার দের ১০টাকা। দীর্ঘদিন ধরে এই সংগঠন রাজ্য সরকারের কাছে দাবি জানিয়ে আসছেন ১০ টাকার পরিবর্তে ৫০টাকা বরাদ্দ করা হোক ধান ভাঙার জন্য। কিন্তু সরকার সেই দাবি মানে নি। তাই এবারে সরকারি বরাদ্দ বৃদ্ধি না হলে  ধান কেনা ও ভাঙানোর সাথে যুক্ত হবেন না মিল মালিকেরা।বেঙ্গল রাইস মিল এসোসিয়েশনের রাজ্য কার্যকরি সভাপতি আবদুল মালেক বলেন,আমরা যারা সরকারের সঙ্গে বিশেষ করে খাদ্য দপ্তরের সঙ্গে রাইস মিলাররা সহায়ক মূল্যে ধান নিয়ে সেই ধানের যে রাইস যথাসময়ে সরকারের ঘরে পৌঁছে দিয়ে সরকারের যে ১০ কোটি মানুষের রেশন ব্যবস্থা সেই ব্যবস্থাকে সচল রাখার লক্ষ্যে আমরা এতদিন যাবত কাজ করে আসছি।কোন করনা কোভিদ ঝড়-ঝঞ্ঝাট সবকিছুকে উপেক্ষা করে আমরা এই কাজটা করে আসছি।আমাদের যে দাবির লক্ষে এই আন্দোলন আমরা সরকারের যে নীতি ছিল যে ১৮ অক্টোবর যদি কেউ এগ্রিমেন্ট করে,তার জন্য তাকে সুযোগ-সুবিধা দিয়ে দেওয়া হবে। মানে একটা ললিপপ এর মত।সেটা দেখানো হয়েছিল শেষ পর্যন্ত আমরা সেটা নিইনি। আগামী ৫ অক্টোবর তারিখে একটা সুযোগ দেওয়া হয়েছে সেই সুযোগ আমরা কোন অবস্থাতেই নেব না।আমরা এগ্রিমেন্ট করব না।১৯শে অক্টোবর দেওয়া হয়েছিল সেটি বাড়িয়ে ২০ অক্টোবর করা হয়েছে।আমরা সেই জায়গায় যাব না। আমাদের দাবিগুলো সুনির্দিষ্ট ভাবে যদি খাদ্য দপ্তর সঠিক ভাবে নির্ণয় না করে আমাদেরকে এগ্রিমেন্ট করতে বলেন তাহলে আমরা এই বছর সরকারের ধান নেওয়ার জন্য রাজ্যের কোন রাইস মিলার এগ্রিমেন্টের পদক্ষেপ নেবে না। আমাদের দাবি গুলি হল প্রথমত কেন্দ্রীয় সরকার আমাদেরকে ২০ টাকা করে মিলিং চার্জ দেয়।আর তাদেরকে রেশিওতে ৬৮ কেজি চাল দিতে হয়। যে চালটা হয় মাত্র ৬৪ কেজি। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে এই দাবি কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে রয়েছে বহুদিন ধরে। রাজ্য সরকারের কাছে আমাদের যে দাবি ২০১৬ সালে আমাদেরকে ১০ টাকা মিলিং চার্জ দেওয়া হয়েছিল। ২০ টাকা আর ১০ টাকা মোট আমরা ৩০ টাকা মিলিং চার্জ পাই। ধান কেনা নিয়ে রাইস মিলাররা কিভাবে পর্যদস্ত হয়েছে তা সবার জানা আছে।আমরা রাইমিলাররা কাজ করব সঠিক ভাবে ধান নেব, সঠিক ভাবে চাল দেব, সঠিক ভাবে মিলিং চার্জ আমাদের দিতে হবে। আমাদের দাবি হচ্ছে এই মুহূর্তে মিলিং চার্জ যে ৩০ টাকা পায়। সেই ১০ টাকা ২০ টাকা মিলিং চার্জ দিলে চলবে না আমাদের সরকারের কাছে দাবী হচ্ছে ৫০ টাকা করে মিলিং চার্জ এক্ষুনি বাড়াতে হবে। তার কারণ গভমেন্ট বলেছিলেন অন্য রাজ্য কি এইরকম দিচ্ছে।ঝারখান্ড আসাম মিলিং চার্জ বাড়িয়ে ৫০ টাকা এবং ৬০ টাকা করে বাড়িয়ে দিয়েছে।একজন শ্রমিক ধান নামাবে তুলে দেবে চাল পৌঁছে দেবে তাকে মাত্র বারোটা টাকা পারিশ্রমিক দেওয়া হয়। আমাদেরকে সেখানে মিনিমাম ২৫ টাকা খরচা করতে হয়।আমরা বলেছি কেন মার্কেটিং নিয়ে টেন্ডার করছেন না। টেন্ডার করে দেখুন শ্রমিকের খরচ কত।এক কুইন্টাল ধান ভাঙ্গালে তবেই আমি ৩০ টাকা পাই।সেখানে এক কুইন্টাল ধান ভাঙ্গাতে আমাদের খরচ হয় ১৩০ টাকা।সরকার ধান কেনার সময় নির্ধারণ করেছে ২ নভেম্বর।যদি এখন থেকে আমাদের ব্যাংক গ্যারান্টি গুলো নিশ্চিত করে এগ্রিমেন্টটা যদি নিশ্চিত করতে না পারে সম্পূর্ণ না হয় ২ নভেম্বরে গিয়ে এই ধান কিনতে গিয়ে সরকার মুখ থুবড়ে পড়বে। খাদ্য দপ্তর এবং চাষীদের ক্ষতি হবে।সর্বপরি চাষীরা ফরেদের কাছে বিক্রি করতে বাধ্য হবে। মূল্য যদি বৃদ্ধি না হয় তাহলে আমরা এগ্রিমেন্ট করব না।যদি মিলিং চার্জ ট্রান্সপোর্টেশন, এগুলো যদি সঠিক ভাবে না করে দেয়, সেটা যদি সঠিক ভাবে সম্পূর্ণ না হয় তাহলে আমরা এগ্রিমেন্টে যাব না। তাতে যদি আমাদের রাইস মিল গুলোর কাছ থেকে ট্রেড লাইসেন্স উইড্র করে নেয় উইথড্র করে নেবে আমরা চাবি তালা মেরে ওনাদের ঘরের চাবি দিয়ে চলে আসব।

CATEGORIES

COMMENTS

Wordpress (0)
Disqus (0 )