
ভয় হয়
নিজস্ব প্রতিবেদন:- স্বপ্নদীপ কাণ্ডের পুনরাবৃত্তি রোধ করার লক্ষ্যে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রাবাসের সামনে সিসি ক্যমেরা বসানোর যখন প্রস্তাব ওঠে তখন তার বিরোধিতা করে অতিবাম ভাবধারায় বিশ্বাসী আবাসিক ছাত্রদের একাংশ। কখনোই ওরা চায়না ছাত্রাবাসে নিষিদ্ধ মাদক দ্রব্য ব্যবহার সহ যেসব অভিযোগ ওদের বিরুদ্ধে উঠেছে সেগুলো সামনে আসুক। ওদের এই বাধার বিরুদ্ধে যারাই মুখ খুলেছে তাদের বিরুদ্ধে ধেয়ে এসেছে টিপ্পনি - আগে এখানে ভর্তি হয়ে দেখাক তারপর সমালোচনা করবে। ভাবখানা এমন একমাত্র ওরাই বুদ্ধিমান, বাকিরা সব বোকা! ঘটনার পুনরাবৃত্তি দ্যাখা গ্যালো আরজি করের নৃশংস ঘটনাকে সামনে রেখে জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনকে কেন্দ্র করে। তবে এক্ষেত্রে ডাক্তারদের পরিবর্তে তাদের হঠাৎ গজিয়ে ওঠা সমর্থকরা সমাজ মাধ্যমে বেশি সরব হয়। আরজি করের নৃশংস ঘটনার সঙ্গে যুক্ত অপরাধীর চরমতম শাস্তির দাবিতে এইরাজ্যের সীমা ছাড়িয়ে বিশ্বব্যাপী গড়ে ওঠা আন্দোলনে প্রত্যেক সুস্থ ও মস্তিষ্কের মানুষ সমর্থন জানিয়েছে। প্রথম পর্যায়ে জুনিয়র ডাক্তারদের তারা পাশে থেকেছে। যখন এই অরাজনৈতিক আন্দোলন রাজনৈতিক রূপ ধারণ করে সাধারণ মানুষ ধীরে ধীরে পাশ থেকে সরে যায়। সরকারি হাসপাতালে কর্মবিরতি পালন করলেও বেসরকারি হাসপাতালে বা নিজেদের ব্যক্তিগত চেম্বারে একশ্রেণির ডাক্তারকে নিয়মিত 'ডিউটি' করতে দ্যাখা যায়। এমনকি মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনায় তাদের দাবির পরিমাণ বাড়তে থাকে। তিলোত্তমার শাস্তির দাবির পরিবর্তে কমিটি গঠন বেশি গুরুত্ব পায়। পাশাপাশি ওইসব ডাক্তারদের গোপন উদ্দেশ্যের বিরুদ্ধে সমালোচনা শুরু হয়। যারা সমালোচনা করতে শুরু করে তাদের বিরুদ্ধে ধেয়ে আসে টিপ্পনি - আগে নিটের মত সর্বভারতীয় পরীক্ষায় পাস করে দেখাক, তারপর সমালোচনা করবে। ওদের পথ অনুসরণ করে আইপিএস, আইএএস সহ অন্যান্য সর্বভারতীয় ও স্থানীয় পরীক্ষা সহ বিভিন্ন পেশার সঙ্গে যুক্ত সফল ব্যক্তিরা যদি বলতে শুরু করেন - আমাদের সমালোচনা শুরু করার আগে নিজেদের যোগ্যতা প্রমাণ করুক, তখন কী হবে? ভয়টা এখানেই! ক্রিকেট নিয়ে আমাদের আবেগ গোটা বিশ্ব জানে। সফল হলেই ক্রিকেটারদের যেমন দেবতার আসনে বসানো হয় তেমনি একটা ম্যাচ ব্যর্থ হলেই নেমে আসে তীব্র সমালোচনা। হাতের কাছে পেলে কীভাবে ব্যাট করা উচিত ছিল সেটা তারা ক্রিকেটের 'দেবতা' শচীনকে অথবা ফুটবলার মেসিকে শিখিয়ে দিত কীভাবে ফ্রিকিকটা মারতে হতো। এখন সেইসব খেলোয়াররা যদি বলে আগে ভাই আমাদের মত খেলতে শেখো তারপর নাহয় সমালোচনা করবে। মিষ্টির দোকানে রসগোল্লা খেতে গিয়ে যদি বলা হয়, ভাল হয়নি। মিষ্টি প্রস্তুতকারক মিষ্টি তৈরির সরঞ্জাম হাতে ধরিয়ে বলতেই পারেন, আগে তৈরি করুন তারপর সমালোচনা করবেন। প্রত্যেকটা পেশার ক্ষেত্রে এই ঘটনা ঘটতে পারে। তখন কেমন লাগবে! তবে খেয়াল রাখতে হবে সমালোচনাটা যেন যথার্থই সম-আলোচনা হয়, যুক্তিহীন অন্ধভক্তি যেন স্থান না পায়।