ভাতের রাজা পান্তা

মায়া সাহা (কলকাতা)

আমি বাপু আর খেতে চাইনা বিরিয়ানি !
আমার যে ভাই আধাসিদ্ধ মশলাবিহীন
মাংস খেতে বড্ড হয়রানি !
ওর চেয়ে তো অনেক ভালো
আমার মায়ের হাতে রান্না বাসি পান্তা ভাত।
একবার যদি খাও তবে চাটতেই হবে হাত !

পান্তা ভাতে নিতে হবে
সরষের তেল -লবন – লঙ্কা,
তারপর -ওকে বেশ করে মাখা।

আরও জমে যায় সে খাওয়াটা
পাতে যদি পড়ে –
দু – চারটে মুসুর ডালের বড়া ।
ওহো ! ওহো ! বাদ কেন যাবে
ঝিরি ঝিরি কাটা আলুভাজা !

খায়নি যে কখনো সে বুঝবে না
পান্তা খাওয়ার আলাদাই মজা !
সাথে খেতে ভুলো না আস্ত কাঁচা পেঁয়াজ,
এটাই তো আমাদের পান্তা খাওয়ার রেওয়াজ।

মায়ের কথা এখন আমার খুব মনে পড়ে।
মা- বাসি পান্তা মাখাতেন বেশ তরিজুত করে !
মায়ের হাতের মাখা পান্তা খেতে,
সকল ভাইবোনেরা বসতাম এক সারি তে।
বৌদি – ভাইঝি – বোনঝি সবাই দলে থাকত,
খেতে খেতে সবার মুখে পান্তার প্রশংসা চলত।

মায়ের হাতের যাদুতে
অচল পান্তা এক নিমিষে হয়ে যেত ভ্যানিস !
পান্তা খেলে জব্বর ঘুম তোরা কি তা জানিস?
পান্তার আছে মহৎ গুণ – মা ঠাকুমার বাণী ।
বাসি পান্তাই কিন্তু পূজা -উৎসবে হয়ে ওঠে মানী।
পান্তাই হলো গ্রাম বাংলায় আসল ভাতের রাজা ।
পান্তা- বিনে আমার আত্মায় ভীষণরকম সাজা ।

তাইতো বলি পান্তা খাওয়া নয় – গরিবের অভিশাপ,
পান্তার সাথে কোনোদিনও হবেনা আমার ব্রেকআপ।

CATEGORIES

COMMENTS

Wordpress (0)
Disqus ( )