
অবশেষে খবরের জেরে খোলা হলো কালভার্ট,খুশি এলাকাবাসী
কৌশিক মুখার্জী: সালানপুর:-
পশ্চিম বর্ধমানের সালানপুর ব্লকের আছড়া গ্রাম পঞ্চায়েতে একটি সরকারি কালভার্ট রাতারাতি মাটি দিয়ে বন্ধ করে দেওয়ার ঘটনায় স্থানীয় বাসিন্দারা দীর্ঘদিন ধরে ভোগান্তির শিকার হয়েছিলেন। কিন্তু সংবাদমাধ্যমের অবিরাম প্রচার এবং স্থানীয় প্রশাসন ও তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্বের দ্রুত পদক্ষেপের ফলে এই কালভার্ট পুনরায় চালু হয়েছে। এই ঘটনায় প্লটিং বিক্রেতাদের দাদাগিরিকে হার মানিয়ে জনসাধারণের পাশে দাঁড়িয়েছেন সালানপুর ব্লকের বিডিও, বারাবনির বিধায়ক বিধান উপাধ্যায়, তৃণমূলের রাজনৈতিক নেতা মুকুল উপাধ্যায় এবং তৃণমূলের সালানপুর ব্লক সহ-সভাপতি ভোলা সিং।আছড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের পানুরিয়া রোডের পাশে কৃষ্ণমোহন ম্যারেজ হলের কাছে অবস্থিত একটি পুরোনো সরকারি কালভার্ট ও নালা রাতারাতি ভেঙে মাটি দিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয়। অভিযোগ, ‘রুদ্রা রেসিডেন্সি’ নামে একটি সংস্থা জমির প্লট বিক্রির স্বার্থে এই ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, PWD-এর জমিতে অবস্থিত এই কালভার্ট ভাঙার আগে কোনো অনুমতি নেওয়া হয়নি। এক গ্রামবাসী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “রুদ্রা রেসিডেন্সি বলছে, তারা জমি কিনেছে, তাই যা খুশি করবে। কিন্তু সরকারি কালভার্ট ভাঙার অধিকার তাদের কে দিল? পঞ্চায়েত কেন চুপ থাকল?”এই কালভার্টটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় স্থানীয় বাসিন্দারা চরম অসুবিধার সম্মুখীন হন। বর্ষাকালে জল নিষ্কাশনের পথ বন্ধ হওয়ায় রাস্তায় জল জমে যাতায়াতে সমস্যা হচ্ছিল। এছাড়াও, কালভার্টের ভাঙা অংশের কারণে দুর্ঘটনার আশঙ্কা বেড়ে গিয়েছিল। সংবাদপত্রে বারবার এই ঘটনা প্রকাশিত হওয়ার পরও আছড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান থেকে সদস্যরা বিষয়টির প্রতি কোনো গুরুত্ব দেননি।সংবাদমাধ্যমে এই ঘটনা বারবার শিরোনাম হওয়ার পর সালানপুর ব্লকের বিডিও বিষয়টির প্রতি গুরুত্ব সহকারে নজর দেন। তিনি তৎক্ষণাৎ পদক্ষেপ গ্রহণ করে কালভার্ট পুনরুদ্ধারের নির্দেশ দেন। এদিকে, তৃণমূল কংগ্রেসের রাজনৈতিক নেতা মুকুল উপাধ্যায়ের নির্দেশে সালানপুর ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সহ-সভাপতি ভোলা সিং প্লটিং বিক্রেতাদের এই অনৈতিক কর্মকাণ্ডকে প্রশ্রয় না দিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের পাশে দাঁড়ান। ভোলা সিং জেসিবি দিয়ে কালভার্ট থেকে মাটি সরানোর ব্যবস্থা করেন এবং জানান, “মানুষের সুবিধার জন্য যা যা প্রয়োজন, তা করা হবে।”স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, কালভার্টের যে অংশ ভেঙে ফেলা হয়েছিল, তা পুনর্নির্মাণ না করা হলে দুর্ঘটনার আশঙ্কা থেকে যাবে। এই উদ্বেগের প্রতি সাড়া দিয়ে ভোলা সিং বলেন, “চিন্তার কোনো কারণ নেই। আমাদের বিধায়ক বিধান উপাধ্যায় এবং মুকুল উপাধ্যায় এই বিষয়টির উপর গুরুত্ব সহকারে নজর রাখছেন। শুধু ভাঙা অংশ নয়, পুরো কালভার্টটিই আরও উন্নতভাবে পুনর্নির্মাণ করা হবে।” তিনি আরও জানান, খুব শিগগিরই এই কাজ শুরু হবে।এই ঘটনায় সালানপুর ব্লকের বিডিও, বিধায়ক বিধান উপাধ্যায়, তৃণমূল নেতা মুকুল উপাধ্যায় এবং সহ-সভাপতি ভোলা সিং-এর দ্রুত পদক্ষেপ জনসাধারণের মনে আস্থা ফিরিয়ে এনেছে। প্লটিং বিক্রেতাদের স্বার্থপরতার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে তারা প্রমাণ করেছেন যে জনসেবাই তাদের প্রধান লক্ষ্য। স্থানীয় বাসিন্দারা এই পদক্ষেপের প্রশংসা করে বলেন, “আমাদের অসুবিধার কথা শুনে প্রশাসন ও নেতৃত্ব যেভাবে এগিয়ে এসেছেন, তা সত্যিই প্রশংসনীয়। আমরা আশা করছি, কালভার্টটি শীঘ্রই পুনর্নির্মাণ হবে এবং আমাদের সমস্যার সমাধান হবে।”যদিও প্রশাসন ও তৃণমূল নেতৃত্বের হস্তক্ষেপে কালভার্ট পুনরুদ্ধারের কাজ শুরু হয়েছে, তবু আছড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের নীরবতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। কালভার্ট ধ্বংসের সময় পঞ্চায়েতের প্রধান ও সদস্যরা কেন কোনো পদক্ষেপ নেননি? স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, “পঞ্চায়েত যদি সময়মতো ব্যবস্থা নিত, তাহলে এতদিন আমাদের এই ভোগান্তি পোহাতে হতো না।”সালানপুরের এই ঘটনা প্রমাণ করে যে, সংবাদমাধ্যমের তৎপরতা এবং প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের সঠিক হস্তক্ষেপ জনসাধারণের সমস্যা সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। প্লটিং বিক্রেতাদের অবৈধ কার্যকলাপের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে সালানপুর ব্লকের বিডিও, বিধান উপাধ্যায়, মুকুল উপাধ্যায় এবং ভোলা সিং জনসেবার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। এখন সকলের দৃষ্টি কালভার্টের পুনর্নির্মাণের দিকে, যা আছড়া গ্রামের বাসিন্দাদের জীবনকে আরও সহজ করে তুলবে।

