সরকারকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে কুলটির হোটেল গুলিতে চলছিল বছরের পর বছর চোরাই জল এর ব্যবসা

সরকারকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে কুলটির হোটেল গুলিতে চলছিল বছরের পর বছর চোরাই জল এর ব্যবসা

কাজল মিত্র: কুলটি:-  অবশেষে সেই বহু প্রতীক্ষিত অভিযান শুরু করল পিএইচই বিভাগ। শুক্রবার সকালে কুলটির কল্যাণেশ্বরী এলাকায় একের পর এক হোটেলে অভিযান চালিয়ে কেটে ফেলা হলো বেআইনি জলের সংযোগ। বছর পর বছর ধরে হোটেলগুলি যেভাবে সরকারের চোখে ধুলো দিয়ে চোরাই পথে জল টেনে ব্যবসা চালিয়ে আসছিল, এবার তা ধরা পড়তেই তোলপাড় শুরু হয়েছে গোটা অঞ্চলে।

ঘটনার সূত্রপাত শুক্রবার সকালে, যখন পিএইচই বিভাগের একটি বিশেষ টিম কুলটির কল্যানেশ্বরীতে এসে অভিযানে নামে।হোটেল গুলির আশেপাশে থাকা ৩০ ইঞ্চি মেন ওয়াটার লাইনে ফুটো করে নেওয়া হয়েছিল অবৈধ সংযোগ—একেবারে পেশাদার কায়দায়। এই অবৈধ সংযোগগুলি এমন ভাবে নেওয়া হয়েছে, যা দেখে বোঝার উপায় ছিল না বছরের পর বছর ধরে সরকারকে কতটা জলের ক্ষতি করে চলেছে এইসব হোটেল।

প্রথমেই অভিযান পড়ে ‘বর্ষা হোটেল’-এর উপর। সেখান থেকে শুরু করে পাশের একটি বাগান, ফাঁকা জমি, সব মিলিয়ে অন্তত ৮টির বেশি অবৈধ পাইপলাইন কেটে ফেলা হয়। পিএইচই বিভাগের এক আধিকারিক যখন মুখোমুখি হলেন সাংবাদিকদের, তিনি মুখ লুকিয়ে ছোট্ট উত্তর দেন—“সরকারি নির্দেশে এই অভিযান চলছে।” কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, এত বছর ধরে এইসব অবৈধ সংযোগ রয়ে গেল কীভাবে?কে বা কারা এদের এই কাজের আড়ালে ছিলেন?

স্থানীয় হোটেল ব্যবসায়ীদের সংগঠনের সভাপতি মনোজ তেওয়ারী বলেন যদি এমন কেউ করে সেটা ভুল। তিনি বলেন,“জলের সমস্যা চরমে পৌঁছেছে,তাই হয়তো অনেকে বাধ্য হয়েই এই পথে গেছে।তবে আমরা চাই সরকার বৈধ ভাবে জল সরবরাহ করুক, তাহলেই হোটেল ব্যবসায়ীরা উপকৃত হবেন।”কিন্তু শুধুমাত্র পাইপ কেটে দেওয়া কি যথেষ্ট? প্রশ্ন তুলছে স্থানীয় নাগরিক মহল। বছরের পর বছর এইসব হোটেল বেআইনিভাবে যে জল টেনে ব্যবসা করেছে, তার জন্য সরকার রাজস্ব হারিয়েছে, সাধারণ মানুষের প্রাপ্য জল কমে গিয়েছে, এবং সেইসঙ্গে বেড়েছে জলচুরি। শুধু অভিযান চালানো কি দায়িত্বের পরিপূর্ণতা? এইসব হোটেলগুলির বিরুদ্ধে কি কোনো মামলা হবে? কেউ কি শাস্তি পাবে?

প্রশ্ন আরও আছে—যখন ৩০ ইঞ্চির মেন লাইনে ফুটো করে জল তোলা হচ্ছিল, তখন কোথায় ছিল নজরদারি? কাদের মদতে এই কাজ সম্ভব হয়েছে?প্রশাসনের অন্দরের কেউ কি এই চক্রে জড়িত?

এই অভিযানে কেবল একটি পর্দা সরানো হয়েছে মাত্র। এখন সময় এসেছে আরও বড় পদক্ষেপ নেওয়ার। যারা সরকারকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে চোরাই পথে ব্যবসা ফুলিয়ে ফেঁপে তুলেছে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তি না হলে এই বার্তা যাবে না যে, আইন সবার জন্য এক।

  

CATEGORIES

COMMENTS

Wordpress (0)
Disqus ( )