
চৌরাঙ্গী-রূপনারায়ণপুর সড়ক, পুকুরে ডুবে জনজীবন, দুর্ঘটনার ছায়া,চার দিনে মেরামতের আশ্বাস, কিন্তু কবে মিলবে স্থায়ী সমাধান?
কৌশিক মুখার্জী: কুলটি:-
চৌরাঙ্গী থেকে রূপনারায়ণপুর যাওয়ার সড়ক এখন আর পথ নয়, যেন এক বিশাল পুকুর।বর্ষার জলে ভরা বড় বড় গর্ত এই সড়ককে যাতায়াতের জন্য বিপজ্জনক করে তুলেছে।দেন্দুয়া থেকে চৌরাঙ্গীর পথে ইন্ডিয়া অয়েল পেট্রোল পাম্পের কাছে সড়কের গর্তগুলো বৃষ্টির জলে ডুবে এখন পুকুরের রূপ নিয়েছে। দুই চাকার যানবাহন থেকে ভারী ট্রাক—সবাই এই পথে চলতে গিয়ে প্রতিনিয়ত বিপাকে পড়ছে। গাড়ির চাকা আটকে যাওয়া থেকে শুরু করে দুর্ঘটনার আশঙ্কা এই সড়ক এখন এলাকাবাসীর কাছে দুঃস্বপ্নের নাম।
এর আগেও সংবাদপত্রে এই সড়কের জরাজীর্ণ অবস্থা নিয়ে খবর প্রকাশিত হয়েছিল। তখন প্রশাসনের তরফে মাটি আর ইট দিয়ে গর্ত ভরাট করে একরকম ‘চোখ ধাঁধানো’ মেরামতের চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু বর্ষার প্রথম ধাক্কাতেই সেই অস্থায়ী ব্যবস্থা জলের তলায়। সড়কের গর্তগুলো এখন শুধু জল জমিয়ে রাখছে না, বরং প্রতিদিন দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়াচ্ছে। বিশেষ করে দুই চাকার চালকদের জন্য এই পথ পার করা যেন প্রাণ হাতে নিয়ে খেলা।
এই বিপর্যয়ের পিছনে মূল কারণ সড়কের পাশে থাকা নর্দমার জল। নর্দমার জল নিয়ন্ত্রণে কোনো সঠিক পরিকাঠামো না থাকায় সড়ক নির্মাণের পর থেকেই জল জমে থাকছে, যা সড়কের কাঠামোকে ক্রমশ ভঙ্গুর করে তুলেছে।পিডাব্লুডি আসানসোল ডিভিশনের আধিকারিক রূপেশ বারুই বলেছেন, “নর্দমার জল সড়কে প্রবাহিত হওয়ায় এই সমস্যা হচ্ছে। আগামী চার দিনের মধ্যে অস্থায়ী মেরামত করা হবে, আর বর্ষার পরে স্থায়ীভাবে সড়ক সংস্কার করা হবে।” কিন্তু এই ‘চার দিনের প্রতিশ্রুতি’ শুনে এলাকাবাসীর মনে শুধুই হতাশা। তারা বলছেন, “এই গল্প বছরের পর বছর শুনে আসছি। কবে আদৌ কাজ হবে?এদিকে,পশ্চিম বর্ধমানের জেলাশাসক পোন্নবলম এস জানিয়েছিলেন চৌরাঙ্গী থেকে রূপনারায়ণপুর হয়ে ঝাড়খণ্ড সীমান্ত পর্যন্ত এই সড়ক রাজ্য জাতীয় সড়কে হস্তান্তরিত হয়েছে। ২০২৪ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে এর প্রশস্তকরণ ও নির্মাণ কাজ শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আজও সেই কাজের কোনো অগ্রগতি নেই। প্রশাসনের এই ঢিলেমি নিয়ে এলাকাবাসীর মনে ক্ষোভ বাড়ছে। চৌরাঙ্গী রূপনারায়ণপুর সড়ক এখন শুধু একটি পথ নয়, প্রশাসনের অবহেলা আর অদক্ষতার প্রতীক। এলাকাবাসী এখন অপেক্ষায়—কবে এই পুকুর শুকিয়ে নিরাপদ, মসৃণ সড়কের দেখা মিলবে? নাকি প্রতিশ্রুতির জলে ভেসে আরও কিছু দিন কাটাতে হবে?