
রানীগঞ্জে ভয়াবহ ধস, রেললাইনের ২০০ মিটার দূরে কয়লা খনির বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে ধ্বস, আতঙ্কে স্থানীয়রা
কৌশিক মুখার্জী: রাণীগঞ্জ:-
পশ্চিম বর্ধমান জেলার রানীগঞ্জের জেমারি গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত ইস্টার্ন কোলফিল্ডস লিমিটেড (ইসিএল)-এর সাতগ্রাম শ্রীপুর এরিয়ার চলবলপুর বাদকুঠি কোলিয়ারিতে ভয়াবহ ধসের ঘটনা ঘটেছে। আজ, শুক্রবার ভোর পাঁচটা থেকে এই পুরনো বন্ধ কোলিয়ারির সিলকৃত খনি মুখের চারপাশের বিস্তীর্ণ এলাকা সশব্দে ধসে যাচ্ছে। প্রায় ৭০ থেকে ৮০ ফুট গভীরে ধসে যাওয়া এই এলাকাটি মাত্র ২০০ মিটার দূরে অবস্থিত মেন রেললাইনের কাছাকাছি, যেখানে দূরপাল্লার ট্রেন চলাচল করে। এই ঘটনায় স্থানীয় বাসিন্দারা চরম আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন।
চলবলপুর বাদকুঠি এলাকায় ৫০টিরও বেশি পরিবার দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করে আসছে। ধসের এই ঘটনা তাদের জীবনের জন্য মারাত্মক হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ইসিএল কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণে এই ধরনের ঘটনা বারবার ঘটছে। তাদের অভিযোগ, কয়লা খনিগুলি সঠিকভাবে বালি দিয়ে ভরাট না করায় এই ধসের ঘটনা ঘটছে। ধসের কাছাকাছি থাকা বেশ কয়েকটি বাড়ির বাসিন্দারা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করতে বাধ্য হচ্ছেন। স্থানীয় বাসিন্দা রমেশ মণ্ডল বলেন, “আমরা প্রতিদিন ভয়ে ভয়ে জীবন কাটাচ্ছি। যেকোনো মুহূর্তে আমাদের বাড়িগুলো ধসে যেতে পারে। ইসিএল কর্তৃপক্ষ কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না।” আরেক বাসিন্দা মিনতি দেবী জানান, “এই ধসের শব্দে আমরা ঘুম থেকে উঠে পড়েছি। আমাদের বাচ্চাদের নিয়ে কোথায় যাব, কী করব, বুঝতে পারছি না।”এই ধসের এলাকা থেকে মাত্র ২০০ মিটার দূরে অবস্থিত মেন রেললাইন, যেখানে দূরপাল্লার ট্রেন চলাচল করে। বর্তমানে রেললাইনে ধীর গতিতে ট্রেন চলাচল অব্যাহত থাকলেও, এই ধসের ঘটনা রেল যোগাযোগের জন্যও ঝুঁকি তৈরি করছে। এখনো পর্যন্ত ধসপ্রবণ এলাকাটিকে ঘিরে দেওয়ার বা নিরাপত্তার জন্য কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি বলে জানা গেছে।স্থানীয়রা ইসিএল কর্তৃপক্ষের কাছে তাদের নিরাপত্তার জন্য জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন। তারা দাবি করেছেন, খনিগুলি সঠিকভাবে ভরাট করা এবং এলাকাটিকে নিরাপদ করার জন্য অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়া হোক। এই ঘটনা নিয়ে স্থানীয় প্রশাসন ও ইসিএল কর্তৃপক্ষের তরফে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি পাওয়া যায়নি। এই ধরনের ঘটনা রানীগঞ্জের কয়লা খনি অধ্যুষিত এলাকায় বারবার ঘটছে, যা স্থানীয় বাসিন্দাদের জীবন ও সম্পত্তির জন্য ক্রমশ হুমকি হয়ে দাঁড়াচ্ছে। স্থানীয়দের আতঙ্ক কাটিয়ে তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কর্তৃপক্ষ কী পদক্ষেপ নেয়, সেদিকে নজর রাখছে গোটা এলাকা।
