
ভারতীয় ভূবৈজ্ঞানিক সর্বেক্ষণ (GSI) সংস্থা মধ্যপ্রদেশের জব্বলপুরে গুরুত্বপূর্ণ খনিজ বিষয়ক জাতীয় সম্মেলনের আয়োজন করল
কলকাতা, ৭ আগস্ট, ২০২৫
ভারতীয় ভূবৈজ্ঞানিক সর্বেক্ষণ (GSI) সংস্থা তার ১৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে মধ্যপ্রদেশের জব্বলপুরে দুইদিনব্যাপী একটি জাতীয় সম্মেলনের আয়োজন করেছে। সম্মেলনের বিষয় “গুরুত্বপূর্ণ খনিজ: অনুসন্ধান ও আহরণ”।
আজ সম্মেলনের উদ্বোধন করেন রানী দুর্গাবতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য রাজেশ কুমার ভার্মা। তাঁর সঙ্গে ছিলেন ভারতীয় ভূবৈজ্ঞানিক সর্বেক্ষণ (GSI) বিভাগের মহানির্দেশক শ্রী অসিত সাহা। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন মিনারেল এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড কনসালটেন্সি লিমিটেডের (MECL) চেয়ারম্যান ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর শ্রী আই. ডি. নারায়ণ এবং অ্যাটমিক মিনারেলস ডিরেক্টরেট ফর এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড রিসার্চের (AMD) নির্দেশক শ্রী ধীরজ পান্ডে। এছাড়াও নীতিনির্ধারক, বিশ্ববিদ্যালয়, গবেষণা প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষাক্ষেত্রের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
বর্তমান যুগে প্রযুক্তি ও শিল্পোন্নয়নের সাথে সাথে গুরুত্বপূর্ণ খনিজসম্পদের গুরুত্ব বৃদ্ধি পাচ্ছে — বিশেষত পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি, বৈদ্যুতিক যানবাহন ও ইলেকট্রনিকস ক্ষেত্রে। ২০৩০ সালের মধ্যে ৫০০ গিগাওয়াটজীবাশ্ম নয় এমন জ্বালানী এবং ২০৭০ সালের মধ্যে শূন্য নির্গমনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের ক্ষেত্রে এই খনিজগুলি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই সম্মেলনটি ভবিষ্যতে খনিজ সম্পদের ব্যবহারের ক্ষেত্রে একটি বিশদ রূপ ও রেখা নির্ধারণ করবে।
শ্রী সাহা তাঁর বক্তব্যে বলেন, “GSI শুধুমাত্র কয়লা অনুসন্ধান থেকে তার যাত্রা শুরু করে বর্তমানে ভূ-বৈজ্ঞানিক ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক স্বীকৃত একটি প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরিত হয়েছে।”
তিনি জাতীয় ক্রিটিক্যাল মিনারেল মিশন-এর গুরুত্ব তুলে ধরে প্রযুক্তিগত অগ্রগতি এবং শক্তি ক্ষেত্রে স্বনির্ভরতা নিশ্চিতকরণের মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ খনিজ সম্পদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার ওপর জোর দেন। তিনি বিশ্বব্যাপী প্রতিযোগিতার পরিপ্রেক্ষিতে জিএসআই, বিভিন্ন অংশীদার এবং শিক্ষাক্ষেত্রের মধ্যে সহযোগিতার আহ্বান জানান। এছাড়াও তিনি গতিশীল অর্থনীতির সুযোগ গ্রহণ এবং আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে এখনও অনাবিষ্কৃত খনিজ সম্পদের যথোপযোগী ব্যবহারের আহ্বান জানান।
শ্রী নারায়ণ গুরুত্বপূর্ণ খনিজ অনুসন্ধানে জিএসআই-এর ভূমিকার প্রশংসা করেন। তিনি জাম্বিয়ায় মৌলিক ধাতু ও গুরুত্বপূর্ণ খনিজ অনুসন্ধানে MECL ও GSI-র যৌথ সহযোগিতার কথা উল্লেখ করেন। তিনি খনিজ সম্পদের বৃদ্ধিতে উদ্ভাবন, অংশীদারিত্ব এবং প্রচেষ্টার মাধ্যমে স্বনির্ভরতা অর্জনের অভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরেন।
উদ্বোধনী ভাষণে, অধ্যাপক ভার্মা ভারতের পুনর্নবীকরণযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার ও প্রযুক্তিগত স্বনির্ভরতা অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ খনিজের ভূমিকাকে গুরুত্ব দিয়ে আমদানির উপর নির্ভরতা কমাতে দ্রুত অনুসন্ধান প্রক্রিয়া বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন। তিনি এই ক্ষেত্রে জিএসআই-এর সদর্থক ভূমিকার প্রশংসা করেন।
শ্রী পান্ডে তাঁর ভাষণে পারমাণবিক ও বিরল খনিজের গুরুত্ব তুলে ধরেন যা ভারতের শক্তি নিরাপত্তা ও ডিজিটাল অগ্রগতির জন্য অতি আবশ্যক। তিনি জিএসআই-এর সক্রিয় উদ্যোগের প্রশংসা করে বিভিন্ন সংস্থার মধ্যে গভীর ও কৌশলগত সমন্বয়ের উপর জোর দেন।
সম্মেলনে বেশ কিছু প্রকাশনা প্রকাশিত হয়, যার মধ্যে রয়েছে:
১. জিএসআই-এর জাতীয় সম্মেলনের সারাংশ সংকলন
২. জিএসআই মধ্যাঞ্চলের হিন্দি পত্রিকা “নর্মদা”
৩. ভারতের গুরুত্বপূর্ণ খনিজ ব্লকের সংকলন
৪. জিএসআই দ্বারা হস্তান্তরিত নিলামযোগ্য ব্লকের সংকলন
৫. গ্রাফাইট ও ফসফোরাইট খনিজ সম্পদের বেল্ট ম্যাপ (বেতুল ও ঝাবুয়া, মধ্যপ্রদেশ)
৬. জিএসআই-এর রেকর্ডস, ভলিউম ১৫৬, ১৫৭, ১৫৮ (পার্ট ৬, মধ্যাঞ্চল)
৭. মধ্যপ্রদেশের ১০টি জেলার খনিজ সম্পদের মানচিত্র
সম্মেলনের প্রথম দিনটি ছিল জ্ঞান বিনিময়, উদ্ভাবন ও ভবিষ্যতের রূপ ও রেখা নির্ধারণে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই অধিবেশনে ভারতের খনিজ ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত করতে জিএসআই-এর ভূবিজ্ঞানভিত্তিক দৃষ্টিভঙ্গি ও খনিজ বিজ্ঞানে জাতীয় অগ্রগতির প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত হয়েছে।
SSS/PK/7.8.25/….

