
বজ্রপাত – সতর্কতা জারি করল রাজ্যের বিপর্যয় ব্যবস্থাপন ও অসামরিক প্রতিরক্ষা দপ্তর
জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী: ফাইনাল এক্সপোজার:- বজ্রপাত হলো একটি প্রাকৃতিক ঘটনা। মূলত মে ও জুন মাসে বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ বেড়ে যায়। উষ্ণ এবং শীতল বায়ু মিলিত হলে বায়ুস্তর অস্থির হয়ে ওঠে এবং বজ্রগর্ভ মেঘ সৃষ্টি করে। ফলে এই সময় বজ্রপাতের ঘটনা বেশি ঘটে। দিনের বেলায় তাপমাত্রা বেশি থাকায় দিনের বেলায় বিশেষ করে দুপুরের পর থেকে বিকেল পর্যন্ত বজ্রপাতের প্রবণতা বেশি থাকে।এরফলে প্রতি বছর বহু মানুষের জীবনহানি ও সম্পত্তির ক্ষতি হয়। আবহাওয়াবিদদের মতে, জলীয় বাষ্পপূর্ণ উষ্ণ বাতাস উপরে উঠে মেঘের সৃষ্টি করে। এই মেঘের মধ্যে থাকা জলীয় বাষ্প ঘনীভূত হয়ে জলকণায় পরিণত হয়। জলকণাগুলির পারস্পরিক ঘর্ষণ ও সংঘর্ষের ফলে তড়িতের সৃষ্টি হয়। মেঘের উপরের অংশে থাকে ধনাত্মক তড়িৎ এবং নীচের অংশে থাকে ঋণাত্মক তড়িৎ। যখন এই তড়িতের পরিমাণ অনেক বেড়ে যায় তখন বজ্রপাতের সৃষ্টি হয় এবং মেঘ ও পৃথিবীর মধ্যে দিয়ে তীব্র গতিতে প্রবাহিত হয় এবং আলো ও শব্দের মাধ্যমে প্রকাশিত হয়। এই সময় বাতাসের তাপমাত্রা ১০০০০ থেকে ৩০০০০ ডিগ্রি সেণ্টিগ্রেড পর্যন্ত হতে পারে।এর সংস্পর্শে আসা যে কোনো জীব তৎক্ষণাৎ মারা যেতে পারে। ঘন কালো মেঘ, বৃষ্টি সঙ্গে প্রবল বাতাস ইত্যাদি হলো বজ্রপাতের প্রাথমিক লক্ষণ। এগুলি দেখা গেলে সঙ্গে সঙ্গে সতর্কতা অবলম্বন করতেই হবে। পরিবেশবিদদের মতে দুষণের মাত্রা বেড়ে যাওয়ার জন্য ইদানীং বজ্রপাতের সংখ্যা ও তজ্জনিত মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে।

যেকোনো প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের মত বজ্রপাত রোধ করা সম্ভব নয়। আগাম ইঙ্গিত পাওয়ার জন্য যেমন কিছু এ্যাপস ব্যবহার করা হচ্ছে তেমনি ইউরোপ ও আমেরিকার মত উন্নত দেশগুলিতে আধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা হচ্ছে। বাড়ির বাইরে কিছু সতর্কতা মেনে চললে জীবনহানি হ্রাস করা যেতেই পারে। তার জন্য রাজ্যের বিপর্যয় ব্যবস্থাপন ও অসামরিক প্রতিরক্ষা দপ্তর বেশকিছু সতর্কতা অবলম্বন করার জন্য রাজ্যবাসীকে পরামর্শ দিয়েছে। যেমন, উঁচু গাছ বা বিদ্যুতের খুঁটির কাছাকাছি থাকতে নিষেধ করা হয়েছে, সম্ভব হলে কোনো বাড়ির ভেতরে আশ্রয় নিতে বলা হয়েছে। খোলা জায়গায় থাকলে যতটা সম্ভব নীচু হয়ে গুটিসুটি মেরে বসে থাকতে বলা হলেও মাটিতে শুতে নিষেধ করা হয়েছে। ধাতব বস্তু এড়িয়ে চলতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি বজ্রপাতে আহত ব্যক্তির চিকিৎসা সংক্রান্ত কিছু পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।