
কলকাতায় শহরের সৌন্দর্যায়ন এবং বন্দর-কেন্দ্রিক অংশীদারিত্ব
প্রেস ইনফরমেশন ব্যুরো
ভারত সরকার
*********
কলকাতা, ৬ আগস্ট, ২০২৫
কলকাতার ঐতিহাসিক নদীঘাটের পুনর্নবীকরণের লক্ষ্যে এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে আজ শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি বন্দর, কলকাতা এবং গার্ডেনরিচ শিপবিল্ডার্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেড-এর মধ্যে সুরিনাম ঘাটের সৌন্দর্যায়ন এবং মায়ের ঘাটের উন্নয়ন সংক্রান্ত একটি সমঝোতাপত্র স্বাক্ষরিত হয়েছে। এই চুক্তি এসএমপি কলকাতার সদর দপ্তরে স্বাক্ষরিত হয় এবং এটি নাগরিক পরিকাঠামো উন্নয়ন ও ঐতিহাসিক ঘাটগুলির গৌরব পুনরুদ্ধারে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নেবে। এই কর্মসূচি বন্দরের স্বচ্ছতা অভিযানের অংশ হিসেবেও বিবেচিত।
এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এসএমপি কলকাতার চেয়ারম্যান শ্রী রথেন্দ্র রমন, উপ-চেয়ারম্যান শ্রী সম্রাট রাহি, জিআরএসই-এর চেয়ারম্যান ও ম্যানেজিং ডাইরেক্টর (অব.) কমোডর পি. আর. হরি এবং পরিকল্পনা ও কর্মচারী বিষয়ক নির্দেশক (অব.) ক্যাপ্টেন পি. সুনীলকুমার। দুই প্রতিষ্ঠানের বেশ কয়েকজন শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তাও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
জিআরএসই-র পক্ষ থেকে সিএসআর কার্যক্রম-এর আওতায় সুরিনাম ঘাটের সৌন্দর্যায়নের পাশাপাশি, মায়ের ঘাট উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়িত হবে।
অনুষ্ঠানে শ্রী রথেন্দ্র রমন বলেন, আমাদের ঘাটগুলি কেবলমাত্র যাতায়াতের স্থান নয়, এগুলি কলকাতার সমুদ্রবাণিজ্যিক ইতিহাসের জীবন্ত স্বাক্ষর, যা ‘City of Joy’ বা আনন্দ নগরীর সাংস্কৃতিক চেতনার সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। জিআরএসই-র সঙ্গে এই অংশীদারিত্বের মাধ্যমে আমরা পরিকাঠামো উন্নয়নের পাশাপাশি, ঐতিহ্য সংরক্ষণ এবং সৌন্দর্যায়নও করছি। এসএমপি কলকাতা এই প্রকল্পগুলির সামাজিক ও সাংস্কৃতিক তাৎপর্যকে উপলব্ধি করে ভবিষ্যৎ রক্ষণাবেক্ষণের জন্য জিআরএসই-কে পূর্ণ সমর্থন দিচ্ছে।”
এই কৌশলগত অংশীদারিত্ব রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলির মধ্যে শহর পুনর্নবীকরণের ক্ষেত্রে ক্রমবর্ধমান সহযোগিতার প্রতীক। সুরিনাম ঘাট ও মায়ের ঘাটের উন্নয়ন স্থানীয় পরিবেশকে উন্নত করার পাশাপাশি, নাগরিকদের শহরের নদীকেন্দ্রিক ঐতিহ্যের সঙ্গে পুনরায় সংযুক্ত করবে।
এই উদ্যোগটি ঐতিহ্য-সচেতন পরিকল্পনা এবং কর্পোরেট অংশীদারিত্ব কীভাবে শহরের নাগরিক ও সাংস্কৃতিক কাঠামোর ওপর দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলতে পারে তার একটি দৃষ্টান্ত।
ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট:
সুরিনাম ঘাট ইতিহাসের এক বেদনাবিধুর অধ্যায়ের সাক্ষী। ১৮৭৩ থেকে ১৯১৬ সালের মধ্যে ৩৪,০০০-এরও বেশি চুক্তিভিত্তিক শ্রমিক, প্রধানত বিহার ও উত্তরপ্রদেশ থেকে, এখান থেকে সুরিনামে পাড়ি দেয়। তাঁরা কঠিন পরিস্থিতির মধ্যেও সুরিনামের সমাজ ও সংস্কৃতিকে গড়ে তুলেছিল। প্রথম জাহাজ ‘লাল্লা রুখ’, ১৮৭৩ সালে ৪১০ জন যাত্রী নিয়ে যাত্রা শুরু করেছিল।
মায়ের ঘাট, যা বাগবাজারের নিকটে অবস্থিত, ধর্মীয় ও আধ্যাত্মিক গুরুত্ব বহন করে চলেছে। মা সারদা তাঁর উদ্বোধন পত্রিকা পরিদর্শনের সময় এই ঘাট ব্যবহার করতেন। এই দুই ঘাটই কলকাতার সমুদ্রবাণিজ্যিক ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য বহন করে চলেছে, যার শিকড় ১৫০০ শতক পর্যন্ত বিস্তৃত, যখন ইউরোপীয় বণিকেরা হুগলিতে আগমন শুরু করেছিল।
***
SSS/PK/6.8.25/