গভীর ছোঁয়া

অনন্যা চক্রবর্তী (কলকাতা)

ঠিক কখন তোমায় মনে পড়ে জানো ?
যখন ওই সূর্যটা জানান দেয়-” রাতের আঁধার কাটিয়ে এই তো আসছি আমি “;
তখনই- অংশুমালীর প্রথম কিরণ ছুঁয়ে দেয় আমাকে আপাদমস্তক !
ঘুম জড়ানো চোখে লেগে থাকে অপূর্ব রূপ।
জোরে নিঃশ্বাস নিতে নিতে বুঝি- আমার প্রতিটা শ্বাস-প্রশ্বাসে জড়িয়ে আছ তুমি- তোমার নাম।
ভোরের শিউলি ঝরা উঠোন, শিশির ভেজা ঘাস, পাখির কলতান..
সবেতেই ছড়িয়ে রেখেছ নিজেকে।
পার্থিব ছোঁয়াগুলো তখন অপার্থিবে পরিণত হয়!
সকালের প্রথম চায়ের কাপে তোমাকে পাই,
একসাথে বসে- সে কী গল্প আর খুনসুটি,
কত যে কথা….তার অর্ধেক হয়তো তুমি শুনতেও চাও না।
নিজের হাতে হাত রেখে অনুভব করতে পারি তোমার পার্থিব শরীর !
কী তীব্র এই আকর্ষণ, চুম্বকের মত টেনে ধরে রাখে।
ঘরের খুঁটিনাটি কাজের সময় বড্ড জ্বালাও আমায়…
কখনো চুলে বিলি কেটে, কখনো চিবুকে আলতো ঠোঁটের পরশ, তো- কখনো আবার হঠাৎ বায়না দুই বাহুডোরে বাঁধার !
দুপুরের ভাত ঘুমে নিজেকে লেপটে নাও আমার আঁচলের সাথে,
প্রচন্ড ভাল লাগা অনুভূতি নিয়ে হাঁ করে চেয়ে থাকি তোমার তাম্বুল চেবানো মুখের দিকে….

“যেমন করে নীড়ে একটি পাখি, সাথীরে কাছে তার নেয় গো ডাকি, যেমন করে সে ভালোবাসে”!!

গালে আলতো পরশ- ঠোঁট দুটো একটু ফাঁক করে তাম্বুলের ছাবা দিয়ে পাশ ফিরে শুলে।
পেছন থেকে জাপটে ধরে নরম ঠোঁটের ছোঁয়ায় আঘাতের পর আঘাত করতে থাকি তোমায় !
মুচকি হেসে এ-পাশ ফিরে আঁকড়ে ধরো জোরে….
শিউড়ে উঠে লুকাই তখন তোমার বুকের মাঝে।
গোধূলির আলোয় তোমার মুখে করুণ ছায়া নেমে আসে,
চোখের কাজল যেন বাঁধ মানে না আর!
আঁধার নেমে আসে আমাদের মিলন সুখে।
অন্ধকারে যে ছায়া দেখা যায় না…..
অংশুমালীর ছায়ায় তখন বিলীন হয় কাম্যার আত্মা!
মিলেমিশে একাকার…..
ডাইরির পাতা ভরতে থাকি মান-অভিমানের গল্পে,
অবুঝ ভালোবাসা মন- কেন বোঝে না,
তুমি-আমি আলাদা নই !

প্রতি রাতে তোমার সোহাগ ভরা আদর,
আর- তোমার বৃদ্ধ বুকে আমার মাথা…
চোখ খুলতে ভয় হয়,
হারিয়ে যাও যদি !!

তোমার হৃদয়ের গভীরতায় আমি ডুবে যাচ্ছি দিন দিন।

CATEGORIES

COMMENTS

Wordpress (0)
Disqus ( )