বিষণ্নতা
সঙ্গীতা মুখার্জ্জী (কলকাতা)

বিষণ্ণতা যখন অন্তঃস্থল ছুঁয়ে যায়, তখন আমার সাজানো গোছানো ঘরটার দিকে ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকি।
ওই যে টানটান করে পাতা বিছানার চাদর, ঝলমলে রঙিন পর্দা,তাকে সাজানো বইপত্র, প্রসাধন সামগ্রী, ভাঁজ করে রাখা আলমারির জামাকাপড় সব সবকিছুরই নীরব তাকিয়ে থাকার মধ্যে কিছু কথা ভেসে আসে।
পারদে ঢাকা কাচটার কাছে গিয়ে নিশ্চুপ দাঁড়িয়ে থাকি। কপালের বলিরেখাটা স্পষ্ট ইঙ্গিত দেয়— অনেকটা সময় পেরিয়ে এসেছি।
জীবনের চাওয়া পাওয়ার হিসেবের খাতা খুলে বসি, আর ভাবি—–বড্ড জটিল।ইসসসস্ কি সহজ অঙ্কই না ছিলো ওই ছাত্রী বেলায়!
বাইরে ছাদ জুড়ে শ্রাবণের ঝমঝম বৃষ্টির সুর। ইচ্ছে করে ভীষণরকম ভিজিয়ে নিই নিজেকে। অন্ততঃ আজকের দিনটা স্বাধীনভাবে বাঁচি, শুধু নিজের জন্য বাঁচি। না তা হয়ে ওঠে না। শরীরকে সুস্থ রাখার তাগিদে গুটিয়ে ফেলি নিজেকে। আমি তো একা নই আমার সাথে জড়িয়ে আরোঅনেকে। এই আমি কে বাঁচিয়ে রাখতে ফিরে আসি সুখী গৃহকোণে।
সাদা পাতার বুক জুড়ে শব্দকে ঢেলে সাজিয়ে স্বস্তি পাই। আওড়াতে থাকি কামিনী রায়ের কবিতার লাইন—–
‘সকলের তরে সকলে আমরা প্রত্যেকে আমরা পরের তরে। ‘

