একা
করবী সাঁতরা (বালি, হাওড়া)

সারা দেহে আষ্টেপৃষ্ঠে যন্ত্রের যন্ত্রনা
কখন নিস্তেজ কখন নিদ্রাহীন আনমনা।
অবশ দেহে কদাচিৎ চোখ খোলা
উদ্বিগ্ন মন প্রিয়কে যায় না ভোলা।
আধো ঘুম আধো জেগে তোমার পথ চাওয়া
শিয়রে দাঁড়ালে তুমি পরম সে পাওয়া।
অস্ফুট স্বরে বললাম ভালো থেকো তুমি
হাত ধীরে বাড়ালাম তোমার দিকে আমি।
হঠাৎ সাবধান বাণী গর্জে ওঠে
যন্ত্রে বাঁধা দেহ –হাত দেবে না মোটে।
অসহায় আমি অবিরাম বয় অশ্রুধারা
তোমার ছলছল আঁখি তুমি প্রিয়হারা।
পাংশু মুখে তুমি শিয়রে দাঁড়িয়ে ক্রন্দনরত
ফিরে যেতে চায় মন ,দেহ অসার আমি ভাগ্যহত।
বিছানায় শরশয্যায় মন সতেজতায় জাগ্ৰত
প্রিয়জন ব্যথায় মূহ্যমান অজানা আশঙ্কায় স্তম্ভিত।
শেষবার, শেষবারের মতো সকলকে দেখতে চায় মন
একা আমি একা শবরূপে নিথর দেহে খুঁজি সারাক্ষণ।
যতক্ষণ দেহে থাকে বল প্রতিপত্তি সম্মান অহংকার
ততক্ষণ অহং এর গর্বে একাকীত্বের অস্বীকার করি বারংবার।
জরাগ্ৰস্ত ভগ্ন দেহ বুঝিয়ে দেয় একা থাকার ভাষা
ভিতরে বাইরে একা শব অসার সংসারে খোঁজে বাসা।