ডায়মন্ড হারবারের উন্নয়ন তুলে কেন্দ্রকে নিশানা অভিষেকের

ডায়মন্ড হারবারের উন্নয়ন তুলে কেন্দ্রকে নিশানা অভিষেকের

বাইজিদ মন্ডল: ডায়মন্ড হারবার:- বছর ঘুরলেই রাজ্যের বিধানসভা ভোট। তার অন্তত্ব ৬ থেকে ৭ মাস আগেই বাংলার বিধানসভা ভোটের ফলাফল নিয়ে ভবিষ্যৎবাণী করে দিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। অভিষেকের কথায়,”ছাব্বিশের ভোটে বিজেপি নাকি বাংলার ক্ষমতা দখল করবে বলছে! গতবারে ওরা ৭৭টা আসন পেয়েছিল,এবারে ওরা ৫০ এর নীচে আটকে যাবে, আজকের সভা থেক আমি এই ভবিষ্যৎবাণী করে গেলাম। ২০১৪ সালে প্রথমবার লোকসভা নির্বাচনে জয়ী হয়ে সংসদে পা রেখেছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এরপর টানা তিনবার সাংসদ নির্বাচিত হয়ে ডায়মন্ড হারবারের উন্নয়নে নিজেকে সক্রিয়ভাবে যুক্ত রেখেছেন। এবছর, ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে রেকর্ড ব্যবধানে জয় ছিনিয়ে নিয়ে নজর কেড়েছেন সারা রাজ্যের রাজনীতির অঙ্গনে।

আগামী ২০২৬ সালে রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। তার আগেই নিজের সংসদীয় এলাকার ১১ বছরের উন্নয়নের খতিয়ান তুলে ধরেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার সাতগাছিয়া বিধানসভার বিষ্ণুপুরের শ্রীকৃষ্ণপুর বোরহানপুর স্কুল ফুটবল মাঠে এক বিশেষ অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করলেন নিজের লেখা বই ‘নিঃশব্দ বিপ্লব’। তৃণমূলের একাধিক নেতার মতে,এই বই শুধুমাত্র ডায়মন্ড হারবারের উন্নয়ন প্রকল্পের খতিয়ানই নয়,বরং ভবিষ্যতের দিশাও নির্দেশ করবে। জেলার দলীয় নেতারা বলছেন,গত এগারো বছরে ডায়মন্ড হারবারের চেহারা আমূল বদলে গিয়েছে।রাস্তাঘাট,পানীয় জল,শিক্ষা,স্বাস্থ্য থেকে শুরু করে যোগাযোগ ব্যবস্থাও,প্রতিটি ক্ষেত্রে সাংসদ অভিষেকের উদ্যোগেই উন্নয়ন ঘটেছে। সেই কারণেই এই বইয়ের নাম ‘নিঃশব্দ বিপ্লব’ কারণ তিনি প্রচার নয়,কাজেই বিশ্বাসী।তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এই বইয়ের মাধ্যমে তাঁর সাংসদ জীবনের সাফল্য ও কাজের বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন।

তবে এই বই প্রকাশ ঘিরে রাজ্য রাজনীতিতে শুরু হয়েছে তীব্র বিতর্ক। বিজেপি শিবিরে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি,তাঁদের অভিযোগ,এটি নিছকই রাজনৈতিক প্রচারের অংশ, মানুষের নজর ঘোরানোর চেষ্টা মাত্র। দলের নেতৃত্বরা বলেন,অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ডায়মন্ড হারবারের একজন সফল সাংসদ,নিজের কাজের খতিয়ান তুলে ধরেছেন মাত্র। এতে যদি বিজেপির গা জ্বলে,তা হলে আমাদের কিছু করার নেই। সাংসদ ডায়মন্ড হারবারকে যে ভাবে উন্নয়ন করেছেন,তাতে সর্ব সাধারণ মানুষও খুশি। মানুষ তাঁকে ভালবেসে,আশীর্বাদ করে এবারে রেকর্ড ভোট দিয়ে জিতিয়েছেন। তাঁর বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর সাহস বিজেপির বড় বড় নেতাদেরও নেই। উন্নয়ন যখন চোখে পড়ছে,তখন বিজেপি নেতৃত্ব কটাক্ষ করছে,কিন্তু মানুষ সব জানে। বুধবার সাংসদ অভিষেক বন্দোপাধ্যায় এই বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন তিনি। এই বইটিতে ৬৯৫ পাতা আছে,প্রথম নিঃশব্দ বিপ্লব ৫০ থেকে ৬০ পাতার বই ছিল। আস্তে আস্তে পাতা বেড়েছে,এই পুস্তিকায় গ্রাম পঞ্চায়েত,জেলা সভাপতি, জেলা পরিষদের,বিধায়ক তহবিলের কাজ নেই। এই পুস্তিকায় আছে শুধু অভিষেকের ৫ কোটি টাকার সংসদ তহবিলের পুঙ্খানুপুঙ্খ হিসাব আছে। কী কী কাজ করেছে সেটা আছে,ফলতা-মথুরাপুর জলের প্রকল্প ভারতের সব থেকে বড় জলপ্রকল্প। সাংসদ অভিষেক বন্দোপাধ্যায় বলেন যারা ডায়মন্ড হারবার মডেল নিয়ে ব্যাঙ্গ বিদ্রুপ করেন তাঁদের যেন পাঠানো হয় এই পুস্তক।মিডিয়াকেও এই বই দেওয়া হয়,সাংসদ তহবিল থেকে কোন কাজ হয়েছে সেই হিসাব আছে। এদিকে দলের সংসদীয় এলাকার কর্মীরাও এই বই প্রকাশকে ঘিরে উচ্ছ্বসিত। তাঁদের মতে, “নিঃশব্দ বিপ্লব” শুধু একটা বই নয়,এটা এক দশকের সাংসদের উন্নয়ন যাত্রার দলিল। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাজ্যের শাসকদলের এই পদক্ষেপ বিজেপি-সহ বিরোধীদের কাছে এক বড় চ্যালেঞ্জ। আগামী দিনে ‘নিঃশব্দ বিপ্লব’ শুধু বই নয়, তৃণমূলের ভোট কৌশলেরও বড় হাতিয়ার হতে চলেছে। রাজনৈতিক মহল মনে করছে,আগামী বিধানসভা ভোটের আগেই এই বই দলের নির্বাচনী প্রচারে বড় ভূমিকা নিতে পারে। কারণ তাতে কেবল সাংসদের কাজের খতিয়ানই নয়,এলাকাবাসীর উন্নয়নের চিত্রও ফুটে উঠে।

CATEGORIES

COMMENTS

Wordpress (0)
Disqus ( )