
বাংলা-ঝাড়খণ্ড সীমান্তে ট্রাক চালকদের কাছে ফাইন এর নামে প্রকাশ্য লুট
সংবাদদাতা: আসানসোল:- পশ্চিমবঙ্গ-ঝাড়খণ্ড সীমান্ত ডিবুডিহ চেকপোস্ট থেকে মাত্র কয়েক কিলোমিটার দূরে চৌরঙ্গী মোড়ে অবস্থিত রামপুর এমভিআই চেকপোস্টে (পশ্চিম বর্ধমান) নিয়োজিত অফিসাররা আজকাল ট্রাক চালকদের জীবন অতিষ্ঠ করে রেখেছে । যদি আপনি কোন ডান্ডা টাক্স ছাড়া ঝাড়খণ্ড থেকে পশ্চিমবঙ্গে প্রবেশ করেন তাহলে আপনাকে ওভার লোডিং বাবদ এক ডান্ডা ট্যাক্স দিতে হয় সেই ট্যাক্স যদি না দিয়ে প্রবেশ করেন তাহলে আপনাকে হাজার হাজার এবং লক্ষ লক্ষ টাকা পর্যন্ত জরিমানা দিতে হতে পারে । যদিও এই ডান্ডা ট্যাক্স এর কোন বৈধতা নেই ।কিন্তু যেভাবে কিছু দালাল দ্বারা এই ট্রাক চালকদের কাছ থেকে ডান্ডা ট্যাক্স আদায় করা হয় তা চালকদের চোখে জল আসার মত ।এই ট্যাক্স এর ব্যাপারে কারো জানা না থাকলে থাকে কয়েক হাজার টাকা জরিমানা দিতে হয়।নাহলে এমভিআই-এর পার্কিং লটে দিনের পর দিন জেলখানার মতো প্রতিদিন শত শত ট্রাক চালক এবং হেলপারদের দিন কাটাতে হয় যার ফলে তাদের কষ্টের কথা কেও ভাবেনা । শরীর খারাপ হলেও তাদের কথা ভাবার কেও নেই ।শুধু তাই নয়, এই সময়ে, দুর্দশাগ্রস্ত চালকদের উপর এমভিআয় কর্মচারীরা অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ পর্যন্ত করতে দেখা যায়।
প্রসঙ্গত এমনই এক ঘটনার শিকার হল রাজস্থান থেকে মার্বেল বোঝাই করে নিয়ে আসা এক ট্রেলার চালকের সাথে যা একেবারে আশ্চর্য করে দেওয়ার মত । এই এমবিআয় দপ্তরের সরকারি অফিসারেরা কাওকে তোয়াক্কা না করে নিজেদের মনমর্জি করে ট্রাক চালকদের উপর অত্যাচার চালাচ্ছে । ঘটনার সম্পর্কে বলতে গেলে জানা যায় ট্রেলার নম্বর আরজে ১৪ জিজি ১৭৫১-এর একটি ট্রেলারকে তিন দিন আগে, এমভিআই এর আধিকারিকেরা ৩ টন ওভারলোডিংয়ের জন্য ধরেছিল।এর জন্য প্রায় ৩২ হাজার টাকা জরিমানা দাবি করা হয়েছিল।চালক খুরশিদ বলেন, তার গাড়িতে কোন ওভারলোডিং নেই তিনি অফিসারদের গাড়ির ওজন করতে বললে,তারা অস্বীকার করে।তবে তিনি জানান আমি যতটা জরিবানা হয়েছে তা দিতে রাজি আছি।কিন্তু যে ওভার লোডিং এর জন্যে ট্রেলারটি ওজন করা হলো সেই আমার কমে যাওয়া ৩ টন জিনিসপত্র ফেরত দিতে হবে।অফিসাররা আমার কথা মোটেও শোনেনি। সোমবার, আমরা আসানসোলের একজন আইনজীবীকে ফোন করি, যার সাথেও এমভিআই এবং তার সহযোগীরা দুর্ব্যবহার করে। তিন দিনপর,যখন আমরা স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের সাথে যোগাযোগ করি,তখন অফিসাররা ৬২০০ টাকা জরিমানা করে আমার গাড়িটি তাড়াহুড়ো করে ছেড়ে দেয়।এভাবে আমার কাছ থেকে প্রায় ২৬ হাজার টাকা অবৈধ দাবি করা হচ্ছিল। এবং তিন দিন ধরে আমার গাড়িটিকে আটকে রাখা হয়েছিল।তিনি বলেন, রাজ্য সরকারের এই লুটপাটের দিকে নজর দেওয়া উচিত।পশ্চিমবঙ্গে প্রবেশ করার পর কোনও চালক খুশি নয় ।কারণ তাদের উপর যেভাবে পুলিশ থেকে আরটিও অত্যাচার চালাচ্ছে তাতে তারা নাজে হাল। তবে এই বিষয়ে এমভিআই অফিসার দের জিজ্ঞাসা করা হলে, তারা কিছু বলতে চাননি এবং এলোমেলো উত্তর দিয়ে বিষয়টি এড়াতে যাবার চেষ্টা করেন। আপনাদের জানিয়ে রাখি যে, প্রতিদিনই, MVI-এর সাথে সরাসরি সম্পর্কযুক্ত দালালদের মাধ্যমে এখানে অতিরিক্ত বোঝাই, অতিরিক্ত উচ্চতার পণ্যবাহী যানবাহনের অবৈধ প্রবেশ করানো হয় এবং যাদের প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয় না তাদের যথেচ্ছভাবে জরিমানা করা হয়। শুধু তাই নয়, MVI-এর গাড়ি করে ট্রাক চালকদের ধাওয়া এবং যানবাহন ধরার সময় অনেক সময় ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটেছে। ঘটনার পর, MVI-এর টহলরত যানবাহনগুলি ঘটনাস্থল থেকে উধাও হয়ে যায়।
