
শিখ প্রার্থীদের ধর্মীয় স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ, প্রতিবাদে প্রধানমন্ত্রীর কাছে চিঠি
রামকৃষ্ণ চ্যাটার্জ্জী, বার্ণপুর, পশ্চিম বর্ধমান -: ২৭ শে জুলাই রাজস্থানের জয়পুরের পূর্ণিমা বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত রাজস্থান হাইকোর্ট সিভিল জজ প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় শিখ প্রার্থীদের ধর্মীয় স্বাধীনতা হস্তক্ষেপের অভিযোগ তুলে বার্ণপুর গুরুদ্বার পরিচালনা কমিটির সম্পাদক সুরেন্দ্র
সিং আত্তু পশ্চিম বর্ধমানের জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে একটি চিঠি পাঠিয়ে ঘটনার তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তুলেছেন। তার দাবি এই ঘটনা শিখ পরিচয় এবং ভারতীয় সংবিধানের ২৫ অনুচ্ছেদের অবমাননা। ঘটনার জন্য তিনি রাজস্থান হাইকোর্ট পরীক্ষা নিয়ামক এবং পূর্ণিমা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে শিখ সম্প্রদায়ের কাছে অবিলম্বে এবং প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়ার দাবি তোলার পাশাপাশি কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার ও শিখ প্রার্থীদের ‘K’ অক্ষরটি খুলতে বাধ্য করা পরীক্ষা কর্মকর্তাদের বরখাস্তের দাবি জানিয়েছেন। ভবিষ্যতে এই ধরণের ঘটনা পুনরাবৃত্তি যাতে নাহয় তারজন্য তিনি ভারত সরকার এবং সমস্ত রাজ্য সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছেন। তার দাবি সমস্ত ধর্মীয় প্রতীকের সম্পূর্ণ সুরক্ষা নিশ্চিত করা হোক।
একইসঙ্গে শিখ পরিচয় রক্ষায় সাহস দেখানোর জন্য জাতীয় পর্যায়ে গুরপ্রীত কৌরকে সম্মানিত করার দাবি জানিয়েছেন। চিঠিতে তিনি উল্লেখ করেছেন উক্ত পরীক্ষা কেন্দ্রে অনেক শিখ প্রার্থীকে তাদের ধর্মীয় বিশ্বাস পালনের জন্য অপমানিত ও হয়রানি করা হয়েছিল। জোর করে তাদের পবিত্র কাকর, বিশেষ করে কৃপাণ এবং কারা খুলে ফেলতে বাধ্য করা হয়েছিল। অথচ এগুলো প্রতিটি অমৃতধারী শিখের বিশ্বাসের অবিচ্ছেদ্য অংশ। সাংবিধানিক সুরক্ষা সত্ত্বেও পরীক্ষা কর্মকর্তারা শিখ প্রার্থীদের উপর মানসিক চাপ সৃষ্টি করে। অনেক পরীক্ষার্থী অনিচ্ছা সত্ত্বেও পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য তাদের ধর্মীয় প্রতীক সরিয়ে ফেলেন। কিন্তু সাহসী শিখ কন্যা গুরপ্রীত কৌর তার বিশ্বাসের সাথে আপোষ করেননি এবং তার ধর্মীয় অধিকারের জন্য রুখে দাঁড়ান। তার দাবি এই বৈষম্যমূলক এবং অপমানজনক ঘটনা কেবল প্রশাসনিক ত্রুটি নয়, বরং সমগ্র শিখ সম্প্রদায়ের মর্যাদা, অধিকার এবং পরিচয়ের উপর সরাসরি আক্রমণ। তিনি আরও বলেন, যদি উপরোক্ত দাবিগুলির উপর দ্রুত এবং সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ না নেওয়া হয়, তাহলে আমরা ধরে নেব যে এই সরকার আমাদের ব্যথার প্রতি বধির। শিখ সম্প্রদায় আর প্রতীকী সম্মানের আড়ালে লুকিয়ে থাকা আসল অপমান সহ্য করবে না। যদি এই বিষয়ে নীরবতা এবং নিষ্ক্রিয়তা অব্যাহত থাকে, তাহলে এটি শিখ অধিকার এবং পরিচয়ের প্রতি ইচ্ছাকৃত অবহেলা হিসাবে বিবেচিত হবে। তিনি এই চিঠির একটি অনুলিপি রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী, রাজস্থান সরকারের মুখ্য সচিব এবং রাজস্থান হাইকোর্ট সিভিল জজ প্রিলিমিনারি পরীক্ষা কমিটির কাছেও পাঠিয়েছেন।