
কচুরিপানা দিয়ে পরিবেশ বান্ধব রাখি তৈরি করলেন স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা
রামকৃষ্ণ চ্যাটার্জ্জী, আসানসোল, পশ্চিম বর্ধমান -: দূষণের বেড়ি যখন আমাদের আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে ফেলেছে, রঙিন বিজ্ঞাপনী চমকের পাল্লায় পড়ে আমরা যখন সাধারণ জ্ঞান হারিয়ে ফেলছি ঠিক তখনই পরিবেশ বান্ধব রাখির সম্ভার নিয়ে সাধারণ মানুষের দরবারে হাজির হলেন পশ্চিম বর্ধমানের পাণ্ডবেশ্বর হরিপুর পঞ্চায়েত এলাকার স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা। অবহেলিত কচুরিপানা দিয়ে তারা তৈরি করলেন রাখি। এই অভিনব রাখি দেখে মুগ্ধ এলাকাবাসী। ইতিমধ্যে তারা পাণ্ডবেশ্বর পঞ্চায়েত সমিতিতে ৭০০টি এবং হরিপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে ৫০০ টি রাখি সরবরাহ করেছে। পাশাপাশি স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে এই রাখির চাহিদা ব্যাপক। ফলে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের আয় বেড়েছে অনেকটাই। তাদের আশা ভবিষ্যতে এই রাখির চাহিদা আরও বাড়বে। জানা যাচ্ছে, স্থানীয় পঞ্চায়েতের উদ্যোগে একটি বেসরকারি সংস্থা সংশ্লিষ্ট স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের কচুরিপানা থেকে রাখি, থলে সহ বিভিন্ন পরিবেশ বান্ধব সামগ্রী তৈরি করার বিষয়ে ১৫ দিনের প্রশিক্ষণ দেয়। রাখি বন্ধন উৎসবকে মাথায় রেখে তারা কচুরিপানা দিয়ে রাখি তৈরির কাজ শুরু করে। গোষ্ঠীর সদস্য মন্দিরা সূত্রধর, আলপনা মন্ডল প্রমুখরারা বললেন, কচুরিপানা ছাড়াও রাখি তৈরি করতে উপকরণ হিসেবে কাগজ, আঁঠা, চুমকি, রং, বার্নিশ ইত্যাদি ব্যবহার করা হয়েছে। বাজারে ১০-২০ টাকা দামে সেই সব রাখি বিক্রি হচ্ছে। চাহিদাও প্রচুর। তাদের এই অভিনব রাখির প্রশংসায় পঞ্চমুখ স্থানীয়রা। হরিপুর পঞ্চায়েতের প্রধান আশা মন্ডল বললেন- পরিবেশের কথা মাথায় রেখে গোষ্ঠীর মহিলাদের এই কাজে প্রশিক্ষণ ও উৎসাহ দেওয়া হয়েছে। কচুরিপানা থেকে তৈরি রাখি,থলি ইত্যাদি সম্পর্কে ক্রেতাদের চাহিদা দিনে দিনে যেভাবে বাড়ছে তাতে আশা করা যায় আগামীদিনে এই সব জিনিস তৈরি করে গোষ্ঠীর মহিলাদের আয় বেড়ে যাবে। পাশাপাশি দূষণের হাত থেকে পরিবেশ অনেকটাই রক্ষা পাবে। একই সুর শোনা গেল উপপ্রধান গোপীনাথ নাগের কণ্ঠে। তিনিও গোষ্ঠীর মহিলাদের আয় বৃদ্ধির বিষয়ে খুবই আশাবাদী। তার আশা আগামীদিনে অন্যান্য স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যরা কচুরিপানা থেকে রাখি সহ অন্যান্য সৌখিন সামগ্রী তৈরি করতে এগিয়ে আসবে।