
দারিদ্র্যতার কাছে হার মানেনি স্বপ্ন, শিলিগুড়ির মনোজিতের সাফল্য পেল ডানা
ভাস্কর চক্রবর্তী, শিলিগুড়ি: ছিল এক আকাশ স্বপ্ন! বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল অর্থ। কিন্তু দারিদ্র্যতা যে স্বপ্নকে থামাতে পারে না তা আবারও প্রমাণ হল। আর এই প্রমাণ দিল শিলিগুড়ি বরদাকান্ত বিদ্যালয়ের ছাত্র মনোজিৎ দাস। আর্থিক অনটনের কারণে উচ্চমাধ্যমিকের পর পড়াশোনা বন্ধ হওয়ার আশঙ্কা থাকলেও, বিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় ও শিলিগুড়ি মিউনিসিপাল কর্পোরেশনের মেয়র গৌতম দেবের সহায়তায় খুলে গেল উচ্চশিক্ষার নতুন দিগন্ত।
চলতি বছরের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় কৃতিত্বের সঙ্গে পাশ করে মনোজিৎ। এরপর জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষায় বসে। কঠোর অধ্যাবসায়ের ফলে সে সেই পরীক্ষাতেই উত্তীর্ণ হয়। এরপর তেলেঙ্গানার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি, ওয়ারংগেলে পড়বার সুযোগ ইতিমধ্যে এসে পৌঁছেছে মনোজিতের কাছে। কিন্তু পরিবারের সীমিত আয় শিক্ষার ব্যয়ভার বহন করতে পারছিল না। এরপরই মনোজিৎ বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের কাছে বিষয়টি তুলে ধরে। এরপরই কর্তৃপক্ষ, ২২ হাজার টাকা সাহায্য তুলে দেয়া মনোজিতের হাতে। এছাড়াও বিদ্যালয়ের তরফে বিষয়টি মেয়রের কাছে তুলে ধরা হয়।
বিষয়টি জানতে পেরে মেয়র গৌতম দেব মনোজিতের সঙ্গে দেখা করেন। এবং মানবিকতার পরিচয় দিয়ে ব্যক্তিগতভাবে মনোজিতকে দু’বার আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন। উচ্চশিক্ষায় খরচ ভার যাতে কোনওভাবে বাধা হয়ে না দাঁড়ায়, সেই আশ্বাসও মেয়র দেন। তাঁর কথায়, “মেধা ও পরিশ্রমকে অর্থের অভাব যেন কখনও থামাতে না পারে, সেজন্য আমরা ওঁর পাশে আছি।”
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিপ্লব সরকার এই সহায়তার জন্য মেয়রের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, “প্রাথমিকভাবে মনোজিৎকে বিদ্যালয়ের তরফেও সাহায্য করা হয়। তবে মেয়র সাহেবের এই উদারতা ও মানবিকতার উদাহরণ অন্য শিক্ষার্থীদেরও আগামীতে উচ্চশিক্ষায় অনুপ্রেরণা যোগাবে।” প্রধানশিক্ষক আরও বলেন, “ইচ্ছাশক্তি ও সঠিক সহায়তা থাকলে দারিদ্র্যও স্বপ্নকে হার মানাতে পারে না।”