হৃদবৃক্ষ
নীহার চক্রবর্তী (বেথুয়াডহরি, নদীয়া)

বেথুয়াডহরি থেকে কোলকাতায় বিশেষ এক কাজে গিয়ে সন্ধের পর বাড়ি ফিরলাম। বাড়ি ফেরার আগে গলির মধ্যে আবিষ্কার করলাম–
আরে, আমি যে এত পথ উল্টো জামা পরে বেরিয়ে এলাম! দেখে কেউ তো কিছু বলল না। আশ্চর্য সব মানুষ তো।
বাড়ির মানুষ আমার যাওয়ার সময়টা দেখেনি। খানিক অসুস্থ। আমার বাড়ি থেকে বেরোনোর সময় ঘুমিয়েছিল।
কিন্তু আমার পরনে উল্টো জামা দেখে ও প্রায় চেঁচিয়ে উঠলো।
ধড়ফড় করে বিছানা থেকে উঠে বলল, ‘তোমার কি মাথা গেছে? এভাবে কেউ বাইরে বেরোয়? তাও আবার কোথায়? কোলকাতায়। ছি:, ছি:…’
আমি ওর কথা শুনে অম্লান-হেসে উত্তর দিলাম, ‘একটা ব্যাপার প্রমাণ হওয়ার ছিল। বাইরে যে যতই আমাকে ভালবাসুক, গুরুত্ব দিক, সেই ঘরের মানুষ সবচেয়ে কেয়ারি। নাহলে তো বাইরে কেউ-কেউ বলত। কই বলেনি তো। মজাই দেখে গেল সব।’
আমার কথা শুনে ও থামল। স্মিত হাসল।
পাশে বসেছিলাম।
আমার একটা হাত ধরে একগাল হেসে তখন বলল, ‘তাহলে তো আর কিছু বলার নেই আমার। হ্যাঁ, তুমিও আমার ব্যাপারে খুব কেয়ারি। মনে আছে কয়েকদিন আগে আমার সারা পথ ব্রার ফিতে অনেকটা বেরিয়েছিল, আর তুমি দেখে কি বলেছিলে আমাকে? আসলেই…’
‘আসলেই আর কিছু না। তোমার দুই গালের জন্য আমার দুটো চুমু অপেক্ষা করছে অনেকক্ষণ থেকে। এবার তবে দিই?’
আমার বলার সঙ্গে-সঙ্গে ও রাজি। আমিও প্রাণভরে দিলাম। দুই পিয়াসী হৃদয় সারাদিন পর প্রেমে ফিরে এসে গুনগুন করে গেয়ে উঠল–
‘আমি তোমার প্রেমে হব সবার কলঙ্কভাগী…’