
ছাতিনাকান্দি গোপীবাবুর বাড়িতে তোপধ্বনির মাধ্যমে শুরু হলো দুর্গার সন্ধিপূজা
রক্তিম সিদ্ধান্ত: মুর্শিদাবাদ:- চিরাচরিত রীতি অনুযায়ী মঙ্গলবার দুর্গাপূজার সন্ধিপূজার সূচনা হল কান্দির ছাতিনাকান্দি গোপীবাবুর বাড়িতে তোপধ্বনির মাধ্যমে, মূলত দুর্গাপূজার সন্ধিপূজা হচ্ছে অষ্টমী এবং নবমীর মিলন বা সন্ধিক্ষণ, শাস্ত্রীয় মতে অষ্টমীর শেষ ২৪ মিনিট এবং নবমীর প্রথম ২৪ মিনিট মোট ৪৮ মিনিট দেবী দুর্গাকে চামুণ্ডা রূপে পূজা করা হয় এবং প্রচলিত বিশ্বাস অনুযায়ী এই সন্ধিপূজা সময় দেবীর মুখের দিকে নাকি তাকাতে নেয় কারণ এই সময় দেবীর উগ্রীরূপ চামুণ্ডা শুম্ভ এবং নিশুম্বকে বদ করেছিলেন, এবং প্রত্যেক দুর্গা মণ্ডপের মৃন্ময়ী মূর্তি চিন্ময়ী রূপ ধারণ করেন।
প্রচলিত রীতি অনুযায়ী মুর্শিদাবাদের প্রায় ৫৫০ বছরের প্রাচীন জমিদার গোপীবাবুর বাড়িতে সন্ধিপূজা উপলক্ষে দুটি কামান দাগা হলো, সন্ধিপূজা শুরুতে একটি কমন দাগা হয় যার আওয়াজ শুনে গোপীবাবুুর বাড়ির চতুর্ভুজ দেবী দুর্গার সন্ধিপূজা শুরু হওয়ার পাশাপাশি আশপাশের প্রতেকটি দুর্গাপূজার সন্ধি পূজা শুরু হয়, এবং সন্ধি পূজা শুরু হওয়ার ঠিক ২৪ মিনিট পর নবমী তিথির শুরুতে বলিদানের সময় আরো এটি কামান ফাটানো হল এবং সেই কামানের আওয়াজ শোনার পর ছাগ বলি সম্পূন্ন হল।
শোনাজাই জমিদারি আমলে প্রত্যেকের বাড়িতে ঘড়ি ছিল না তাই সন্ধিপূজা সময় নির্ঘণ্ট বুঝতে আশপাশের পুজো উদ্যোক্তাদের কার্যত হিমসিম খেতে হত, তখন তারা ওই এলাকার জমিদার গোপীকৃষ্ণ সিংহের কাছে বিষয়টি নিয়ে দরবার বরকে পোজাদরিদি জমিদার গোবিবাবু সন্ধিপূজা সময় বোঝানোর জন্য এই দুটি কামান দাগার ব্যবস্থা করেন, কালের অবক্ষয় আজ জমিদারি প্রথা না থাকলেও এই কামান ফাটানো রীতি রয়েছে কিন্তু আগের থেকে কামানের আওয়াজ অনেকতাই কমেছে, বাবুদের বাড়ির তোপধ্বনি শুনে আজ আশপাশের পুজো শুরু হলেও সেই সোয় প্রায় ২০-২৫ কিলোমিটার দূরের খড়গ্রাম, বড়ঞা, ভরতপুর সহ বিভিন্ন দূরদূরান্তের দুর্গাপূজার সন্ধিপূজা শুরু হয় বাবুদের বাড়ির তোপধ্বনি শুনে তাহলে ভাবতে পারছেন সেই সময় এই কামানের আওয়াজ কি বিশাল ছিল।
আজ জমিদার গোপীবাবু না থাকলেও তার বংশধরদের উদ্যোগে এই পূজা হচ্ছে এবং তার আমলের সব রীতিনীতি মেনেই এই পূজা সম্পূন্ন হচ্ছে। বাবুদের বাড়িতে কামান ফাটানো দেখতে এলাকাবাসীদের ঢল চোখে পড়ার মত, অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে মোতায়েন ছিল পুলিশ।

