আঠাশ বছর পরে
মৌসুমী মুখার্জী (খড়গপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর)

চাকরি আমি পেয়েছি বেলা সত্যি, বেতন লাখ খানেক,
মাথার ওপর দায় দায়িত্বও তো ছিল অনেক। দুইবোনের বিয়ে- ভাইয়ের পড়া –মা ছিল অসুস্থ,
বাবা কবেই চলে গেছেন তুমি জানোই তো।
তাও তোমার অপেক্ষা করেছি, বিয়ের সময় হয়নি, বাজেনি টেলিফোন করেছি বুথ থেকে, তুমি সাড়া দাওনি।
২৪৪১১৩৯ কল করলে বেজে যেত কেউ রিসিভ করেনি,
বেজে গেছে দিনের পর দিন ,আজ অবসরেও ভুলিনি।
শুনলাম তুমি বিয়ে করে চলে গেছো জার্মান, জানিনা আদ্যপান্ত,
হাই ফাই লেবেলে সাজানো জীবন ঘুরে বেড়াও বিদেশ যত্রতত্র।
ফ্লাইটে আসা যাওয়া, সময় কম ভাবার,
আমি অভাগা তোমায় না পেয়ে দিশাহারা ফেরার।
তারপর চাকরি সূত্রে আমেদাবাদ নয় পুনে,
ভাবিনি বেলা বোস আজ তোমায় দেখবো এইভাবে এইদিনে।
আজ আঠাশ বছর পরও ভাবি কেমন আছো তুমি বেলা বোস,
জমিয়ে করছো সংসার, বাবার বাধ্যমেয়ে
যখন বলেছে পিঁড়িতে বোস।
একবন্ধু অসুস্থ ছিল এডমিট আসাইলামে, হুইল চেয়ারে মুখ চেনা ওই মানুষ টা কে? ভাবি এক মনে।
মেলাতে পারিনি তুমিই বেলা, পঙ্গু মানসিক ভারহীন, হুইল চেয়ার,
তুমিই বেলা প্রিয়া আমার,, কি ভাবে হলো এই হাল তোমার?
বছর কুড়ির ছেলেটা নিঃশ্চয় তোমার, ওকে ডাকি একবার উদ্দেশ্য জানার ,
হাসবেন্ড তোমায় ছেড়ে দিয়েছে বছর কয়েক আগে,
নিঙড়ে নিয়ে ভিখারী করেছে স্কাউন্ড্রেল এই ভাবে।
ভাতুস্পুত্র এডমিট করেছে কেউ নেই আর বেঁচে,
ও বলেছে আমায়, সব ভুলে গেছে শুধুএকটাই নাম মুখে।
ডাক্তার বলেছেন, যদি সেই নামে কেউ আসে কোনোদিন,
ফিরে পেতে পারে সব হারানো মানুষটা আবার সুখের দিন।
আমি এসেছি বেলা এসেছি চোখে চোখ রাখো একবার,
সুস্থ তোমায় হতেই হবে, সুস্থ বেলাই চ্যালেঞ্জ হোক আমার।
বেলা শেষে বেলা বোস