নাঙ্গেলী
মমতা শঙ্কর সিনহা পালধী (নিউ ব্যারাকপুর, উত্তর চব্বিশ পরগণা)

নাঙ্গেলী এক দুঃসাহসী প্রতিবাদী স্বত্ত্বার নাম,
দু’শত বছর আগে নিজের সম্ভ্রম রক্ষার তাগিদে ভারতের ত্রিভাঙ্কুরে নিম্নবর্ণের নারী হয়েও উচ্চবর্ণের সমাজপতিদের ব্যাভিচারের করেছিলে তুমি তীব্র প্রতিবাদ,
নাঙ্গেলী, সেদিন সমাজপতিদের তরে তীব্র ঘৃণার আগুন প্রজ্জ্বলিত হয়ে উঠেছিল তোমার দুচোখে,
তোমার বক্ষের রক্তে সেদিন ভীত হয়েছিলো ব্যাভিচারীর দল,
তোমার তরে চিরুকান্দের
সহমরণের কাহিনী লিখেছিলো প্রতিবাদের ইতিহাস—।
বন্ধ হয়েছিল মুলাকারামের জঘন্য রীতিরেওয়াজ—।
হায় রে নাঙ্গলী তোমার সম্মানের তরে এ দেশের বুকে আদৌ সেভাবে হয় কি আজও প্রতিবাদ???
কাঁদে কি এ শহর—-যে তোমার নগ্ন শরীরের প্রতিবাদে করে ক্যান্ডেল মিছিল,
গায় উদ্দীপক গান—তোলে স্লোগানের ঝড়???
সে মিছিল ধর্ষকের বলিষ্ঠ কন্ঠের উগ্রতায় হয় প্রতারিত।
বিচার চাই, বিচার চাই—বিচার চাই ধর্ষকের—
আর তখন নাঙ্গেলীর ক্ষত-বিক্ষত লাশ পড়ে থাকে মর্গের শীতলতার আঁধারে।
নির্লিপ্ত,মিথ্যা প্রহসনের প্রতিবাদ, উদ্দামী কন্ঠের স্লোগান—–
এক সময় মুখ লুকাবে নীরবতায়,
আবার কি এ শহরের বুকে মধ্যযুগের মত বসবে মুলাকারাম??
নাঙ্গেলীর মুখ হবে শক্ত হাতে পিষ্ঠ,
ক্ষত-বিক্ষত লাশ হয়ে পড়ে রবে সে ঝোপে-ঝাড়ে ,
কিংবা রাতের আঁধারে লোকচক্ষুর অন্তরালে পুড়ে ছাই হয়ে মিশে যাবে ধরনীতলে????
নাঙ্গেলী তোমার জন্য কপট অশ্রুজলে সিক্ত হবে শহরের রাজপথ,
বিচার কাঁদবে আদালতের অলিন্দে প্রহসনের যন্ত্রনায়,
নাঙ্গেলী,নাঙ্গেলী এ শহর তোমার জন্য নয়—–।